ছয় দিনে ছয় লক্ষ অব্দ

ছয় দিনে ছয় লক্ষ অব্দ পন্থ আসি। হইনু আপন তত্ত্বে কায়াবন্ধী বাসী।। এক রঙ্গি ঘুঁচিয়া দু’রঙ্গেতে প্রকাশ। হারাধন জন্য সদা মনেতে উদাস।। স্বীয় দেশ ত্যাজি কিসে এলে যেই দেশে। কিরূপে যাইব আহা পুনঃ স্বীয় বাসে।। আপ্ত গুণ ধন যত হারাই সমস্ত। হৈলেম কায়াবন্ধী শালে অতি ব্যস্ত।। কিন্তু ছিল মাত্র এক পবিত্রতা গুণ। মাত্র সেই এক […]

ছয় দিনে ছয় লক্ষ অব্দ পন্থ আসি।
হইনু আপন তত্ত্বে কায়াবন্ধী বাসী।।
এক রঙ্গি ঘুঁচিয়া দু’রঙ্গেতে প্রকাশ।
হারাধন জন্য সদা মনেতে উদাস।।
স্বীয় দেশ ত্যাজি কিসে এলে যেই দেশে।
কিরূপে যাইব আহা পুনঃ স্বীয় বাসে।।
আপ্ত গুণ ধন যত হারাই সমস্ত।
হৈলেম কায়াবন্ধী শালে অতি ব্যস্ত।।
কিন্তু ছিল মাত্র এক পবিত্রতা গুণ।
মাত্র সেই এক গুণে ছিলেম নিপুণ।।
সেই গুণে জ্যোতিময় হৃদয় আমার।
তেকারণে বলে সবে প্রসন্নকুমার।।
সেই প্রসন্নতা গুণে গিয়ে স্বর্গ স্থানে।
করিলে মাসন পবিত্রতা সিংহাসনে।।
সর্বথা সেঠাই নিত্যানন্দে পুলকিত।
কোনই প্রকারে কভু নাহিক চিন্তিত।।
মনোরম স্থান ছিল সে মহা উদ্যান।
কিন্তু মাত্র চিন্তা এই ছিলেম অজ্ঞান।।
নিষেধীয় বৃক্ষ এক ছিল সেই স্থানে।
জ্ঞান বৃক্ষ বলে তাহে সর্ব গুণীগণে।।
ভক্ষিতে তাহার ফল নিষেধ রাজার।
পাপীষ্ঠ হৈবে তাহে করিলে আহার।।
রাজার নিষেধ ছিল বুঝি ছলযুক্ত।
ভক্ষাইতে নারদকে করিলা নিযুক্ত।।
আহার করাল যবে নারদ সন্ধানে।
উদয় হৈল হৃদে জ্ঞান সেইক্ষণে।।
চিত্তয়ে জন্মিল তবে এমত সন্তাপ।
নিষেধ না মানি কেন করিলেম পাপ।।
মম প্রতি রাজা আজ্ঞা হৈল তখন।
ভব কারাবন্ধী শালে করিতে গমন।।
অসত্য হৈলা তুমি করিয়ে আহার।
ভব স্কুল কারা ঘরে শিখ সদাচার।।
আপ্তপাঠ পাঠ করি কর জ্ঞান লাভ।
মহারাজ ভাবে সদা ত্যাজিয়ে কুভাব।।
কালে কালে পাঠাইব সদায় শিক্ষক।
কারাভব হৈতে তাঁরা মাত্রই রক্ষক।।
শিক্ষকের বাক্য পালি লাভ শুভ জ্ঞান।
ভব বন্ধীশালা হৈতে পেতে পরিত্রাণ।।
পাইবেক যত ক্লেশ ভব বন্ধীশালে।
দুঃখিত না হবে মনে তাতে কোন কালে।।
গুরুর মারণে কভু না হবে দুঃখিত।
গুরুয়ে মারিয়ে করে সতত জীবিত।।
গুরুর গরল বটে সুধা সমতুল।
গুরু হস্তে মরে যেই পায়ে দুইকূল।।
ভব স্কুলে যত ইতি গুরুর কিঙ্কর।
গুরু করে মারে যদি মারয়ে চাপড়।।
গুরুর চপট বটে স্বর্ণকারী বুটি।
গুরুর চপটে হয়ে স্বর্ণ মাটি ঘটি।।
ভাল মন্দ যত ইতি কর্ম ভবালয়।
গুরুর কৃপা দৃষ্টি বটে এসব নিশ্চয়।।
গুরু দয়া দৃষ্টে যেই হৈবে দুঃখিত।
অত্যন্ত অজ্ঞান বটে সেই অন্ধচিৎ।।
গুরুর আদেশে যেই সদা আনন্দিত।
নিশ্চয় সে হয়ে রাজা দর্শন বিহিত।।
তবে রাজা আজ্ঞা পেয়ে এসে এভুবনে।
মায়াফাঁসে বন্ধি হৈনু কাঞ্চনপুর বনে।।
ওহে প্রভু দয়াময় কৃপার ভাণ্ডার।
মকবুলে অধীনে কৃপা কর একবার।।
ভব বন্ধিশালা হৈতে করি কৃপাদান।
শুভ জ্ঞান দিয়ে আমা কর পরিত্রাণ।।
আমার দুঃখ অবশেষ-রে পরাণের নাথ,
কুক্ষণে আসিলেম এই দেশ।।

লেখক: আবদুল গণি কাঞ্চনপুরী

error:

ছয় দিনে ছয় লক্ষ অব্দ