নিষেধীয় বৃক্ষ এক ছিল স্বর্গ স্থানে।
জ্ঞান তরু বলে তাহে মহাগুণীগণে।।
পাপ কর্তা সন্ধানুসারে তার ফল।
ভক্ষিতে হৈল বাঞ্ছা নরের প্রবল।।
সেই বৃক্ষ ফল নরে করিয়ে আহার।
ভব কারাগারে বন্ধি ত্যাজি স্বর্গদ্বার।।
লোভে পাপ পাপে মৃত্যু শাস্ত্রের বচন।
লোভ লাভে স্বর্গ সুখ হারিল তখন।।
বাঞ্ছিক হৈয়ে হারি গেল স্বর্গ স্থান।
আহা পুনঃ কি প্রকারে পাবে সে উদ্যান।।
অহে প্রভু দয়াময় করুণা ভাণ্ডার।
পুনঃ কারা ভব হৈতে করহ উদ্ধার।।
অজ্ঞান মকবুলে বলে না হৈয় নৈরাশ।
ক্ষুদ্র মন আচ্ছাদনে চন্দ্রিকা প্রকাশ।।
কৃপা বিতরণে প্রভু পাঠাই কোরাণ।
মুক্তি বাক্য তাতে আমা কৈরাছেন দান।।
তেকারণে পাঠাইলে ভব বন্ধি শালে।
প্রসিদ্ধ রক্ষকগণ প্রতি কালে কালে।।
নিরাঞ্জনে যার পরে করি কৃপা দান।
প্রসিদ্ধ গুরুর ক্রোড়ে দিল শুভ স্থান।।
গুরু দয়া দৃষ্টি যোগে পুণ্য আত্মা তার।
প্রভু প্রেম মদে হয়ে উন্মাদ আঁকার।।
প্রেমদীপ্তি তার হৃদে হয়ে প্রজ্জ্বলিত।
জ্ঞানাত্মায়ে দেয়ে তবে বিধান বিহিত।।
শুভ জ্ঞান জন্মে তবে তার হৃদান্তরে।
গুরুর আদেশে চলে পন্থে ধীরে ধীরে।।
প্রথম করায় স্নান ত্রিবিণীর ঘাটে।
বুঝায়ে সন্ধান যেতে ভব সিন্ধু তটে।।
ত্রিবিণীর ঘাটে যেবা করে নিত্য স্নান।
পাপে না লাগিবে তারে ধর্মের প্রমাণ।।
সেই ঘাট স্নানে হয়ে পাপে পুণ্যবান।
সেই ঘাট স্নানে হয় স্থায়ী বর্তমান।।
সেই ঘাট স্নানে হয়ে সাধু সিদ্ধ তনু।
হৃদাকাশে প্রকাশিত হয়ে জ্যোতি ভানু।।
হঠাৎ সে ঘাটে ভেসে বিনাশ কুম্ভীর।
আপনতা নিগঢ়ীয়ে করে আপ স্থির।।
আপ্ত ইচ্ছা মৃত্যু সম হয়ে উপস্থিত।
প্রেম প্রলয়র দিন হয়ে উপনীত।।
তবে জ্ঞান রবি হৃদে হৈয়ে উদয়।
প্রভুর একতা জ্যোতে করে জ্যোতিময়।।
হৃদয় দর্পণ তবে হয়ে পরিষ্কার।
একতা রবির জ্যোতে হেরে অনিবার।।
ইচ্ছা বাঞ্ছা যত তার হৈবে রহিত।
পাপ আত্মা তবে তার হৈবে নাশিত।।
ভব মল যত তার হয়ে পরিষ্কার।
হৃদান্তরে ঝলকিবে বিশ্বাস বাহার।।
জ্ঞান চক্ষে নিরীক্ষিবে প্রভু একেশ্বর।
কদাচিত না দেখিবে তাহার দোসর।।
মাত্র এক কর্তা হবে মনেতে সুসার।
সে বিহনে না হেরিবে কারে কার্য কার।।
দুঃখ সুখ ভাল মন্দ ব্যক্ত গোপন।
মাত্র তাঁর কার্য মনে হবে নিরূপণ।।
হীন শ্রেষ্ঠ যত এই সংসার মাঝার।
ভয় কিবা আশা কার না রহিবে তার।।
জ্ঞান বুদ্ধি নিক্তি তার হৈল প্রচুর।
অতি পরিষ্কার হৈল মনের মুকুর।।
জ্ঞান গুণে হৃদ যবে হৈল নিপুণ।
সর্ব অঙ্গে বিরাজিল সেই জ্ঞান গুণ।।
দর্পেণেতে বিরাজিলে উজ্জ্বল ভাস্কর।
আদর্শ উজ্জ্বল হয়ে ভাস্থ সমন্বর।।
প্রসিদ্ধ হৈল কায়া সে গুণে তাহার।
অমর হৈল মরি মরিবে না আর।।
আপ্ত ইচ্ছা মরিয়ে সে সাধিল জীবন।
স্থায়িত্ব জীবন এই হবে না মরণ।।
ইচ্ছায়ে ইচ্ছাকে মারি হৈল জীবিত।
মৃত্যু আদ্যে মরি হৈল সতত স্থায়ীত্ব।।
পাপাত্মা মারিয়ে তার হৈল সুজন।
পরমাত্মা সনে তার হৈল সম্মিলন।।
দরশন পেল সিদ্ধ হৈল সাধন।
আপ্ত নাশে আপ্ত সনে মিলিল আপন।।
আপনাত্মা নাশে হৈল একতা সাগর।
গুপ্তে ব্যক্তে হৈল সে একতা ভাস্কর।।
চিন রাজ্য সিংহাসন হৈল চিনপতি।
আপন তাহারি পেল আপন সঙ্গতি।।
অধীনতা ঘুঁচি গেল হৈল স্বাধীন।
আর কভু হৈবে না কাহার অধীন।।
সর্ব মনস্কাম ত্যাজি পেল মনস্কাম।
এ ভব জীবনে গেল আপ্ত স্বর্গধাম।।
স্বর্গপুর রম্ভা আর যত দেবগণ।
অহরহ করিবেন চরণ সেবন।।
আর যত জন ভবে স্বর্গ উপযুক্ত।
তার রাঙ্গা পদ সেবে হৈয়ে তাঁর ভক্ত।।
আপন নাশিয়ে আপে সাধিলে আপন।
আপ্ত স্বর্গে আপ্ত সনে আপন দর্শন।।
আপ্ত পরিচয় আর কি দিব বিশেষ।
স্বর্গ দরশনে আপ্ত সর্ব কার্য শেষ।।
তেরশত বিংশ বঙ্গাব্দে মঙ্গলবারে।
সাতাইশে শ্রাবণে বেলা তৃতীয় প্রহরে।।
দ্বিশত ছত্রিশ ছন্দে আপ্ত পরিচয়।
জ্ঞানরূপে করিবারে হৈল সঞ্চয়।।
মকবুলে বলয়ে কেহ থাকে যেই ঘরে।
একাক্ষরে শত কৃত বুঝে সেই নরে।।
আপ্ত সনে আপ্তে মিশি থাক আপ্তে আপ্ত।
এই আপ্ত পরিচয় হৈল সমাপ্ত।।
নিষেধীয় বৃক্ষ এক ছিল স্বর্গ
নিষেধীয় বৃক্ষ এক ছিল স্বর্গ স্থানে। জ্ঞান তরু বলে তাহে মহাগুণীগণে।। পাপ কর্তা সন্ধানুসারে তার ফল। ভক্ষিতে হৈল বাঞ্ছা নরের প্রবল।। সেই বৃক্ষ ফল নরে করিয়ে আহার। ভব কারাগারে বন্ধি ত্যাজি স্বর্গদ্বার।। লোভে পাপ পাপে মৃত্যু শাস্ত্রের বচন। লোভ লাভে স্বর্গ সুখ হারিল তখন।। বাঞ্ছিক হৈয়ে হারি গেল স্বর্গ স্থান। আহা পুনঃ কি প্রকারে পাবে […]