এই ভব বিনে এক আছয়ে ভুবন।
দৃষ্টান্ত ভুবন তাহে বলে গুণীগণ।।
এই ভবে যত কার্য করে যত জনে।
তাহার দৃষ্টান্ত ছবি জন্মে সেই স্থানে।।
এই ভবে হয়ে যে পারদারিক জন।
তার ছবি সেই স্থানে কুকুর মতন।।
যত জন এই ভবে হৈবে লিপ্সক।
অসিদ্ধ কি সিদ্ধ কিছু না করে পৃথক।।
শুকরের মত ছবি হবে সেই স্থানে।
মল কীট প্রায় মল ভক্ষিবে সেখানে।।
ছলরূপে দুঃখ দিবে যে কাহার মনে।
বানরের প্রায় চিত্র তার সেই স্থানে।।
যেই জনে কাড়ি নিবে এথাকার ধন।
তার চিত্র হবে সেথা বাঘের মতন।।
যেই জনে এথাকারে করিবেক দান।
ফলবন্ত বৃক্ষ ছবি হবে সেই স্থান।।
যেই জনে জ্ঞান শিক্ষা দিবে এথাকারে।
বর্ষক মেঘের প্রায় করিবে তাহারে।।
ভাল কার্যে ভাল ছবি হইবে প্রচার।
মন্দ কার্যে সদা হয়ে কুচ্ছিত আঁকার।।
যার কার্য যেন তার ছবি সেই মত।
সতে সৎ চিত্র হয়ে অসতে অসত।।
স্বর্গ কি নরক মূল বটে সেই ছবি।
গুরু পদে বুঝি লিবে জ্ঞান ধন লাভি।।
আপনার স্বর্গ কিবা নরক আপন।
নিজ হৈতে ভিন্ন নহে কার্য কদাচন।।
নিজ হৈতে নিজ কার্য নহে কিছু ভিন।
এই মর্ম বুঝে পায়ে যেই আপ্ত চিন।।
স্বর্গ কি নরক মর্ম বুঝিতে এখন।
দৃষ্টান্ত ভুবন প্রভু করিলা সৃজন।।
কিন্তু হৃদ চক্ষু বিনে এ চক্ষে কখন।
দেখিতে না পারে কভু দৃষ্টান্ত ভুবন।।
সদায় সর্বদা এই নিরাঞ্জন নীতি।
এই ভবে রাখিয়াছে সকলের প্রতি।।
এই ভব জ্ঞান বুদ্ধি না হৈলে হ্রাস।
সেই ভব কার প্রতি না হয় প্রকাশ।।
তেকারণে এথা নিদ্রা করিলা সৃজন।
স্বপ্নরূপে সেই মর্মে বুঝিতে এখন।।
এই ভব জ্ঞান বুদ্ধি নিদ্রা হৈলে হ্রাস।
হয়ে দৃষ্টান্তের ভব স্বপ্নেতে প্রকাশ।।
স্বপ্নে যাহা দেখা যায়ে নিজ কার্য ছবি।
গুণীগণে স্বপ্ন লক্ষে লয়ে জ্ঞান লাভি।।
নিদ্রা আর মৃত্যু দোহ হয়ে দুই ভ্রাতা।
নিজ দরশন হেতু পাঠাইছেন কর্তা।।
স্বপ্নে দৃষ্টান্তের ভব দেখয়ে যেমত।
মৃত্যু পরে দুঃখ সুখ প্রকাশে তেমত।।
মৃত্যু বিনে স্বর্গে কি নরকে যেতে না’রে।
তেকারণে সৃজিলেন্ত মৃত্যু এ সংসারে।।
মৃত্যু বিনে না পাইবে প্রিয়ার দর্শন।
মৃত্যু বিনে যেতে না’রে স্বর্গেতে কখন।।
দরশন বাঞ্ছা হৈলে কর মৃত্যু চেষ্টা।
মৃত্যু মাত্র এই ভবে বটে অতি মিষ্টা।।
দ্বিপ্রকার মৃত্যু আছে জগৎ মাঝার।
মন কর্ণ দিয়ে শুন তাহার বিচার।।
যেই জনে করে নাই আত্মা শত্রু ক্ষয়।
আত্মা যুদ্ধে এই ভবে পায়ে নাই জয়।।
অনিচ্ছায় মৃত্যু হবে এ ভবে তাহার।
আত্মা শত্রু লক্ষে পাবে সেথা কারাগার।।
আত্মা শত্রু রণে যেবা এথা পেল জয়।
দুই কূলে হৈল সে নিশ্চয় অক্ষয়।।
আপ্ত ইচ্ছা মরণের শুন বিবরণ।
ভাণ্ডারী চরণ স্মরি করিনু বর্ণন।।
তার আদ্যে শুন এক শ্রোতব্য কথন।
তাহার শ্রবণে মর্ম করিবে মনন।।
এই ভব বিনে এক আছয়ে
এই ভব বিনে এক আছয়ে ভুবন। দৃষ্টান্ত ভুবন তাহে বলে গুণীগণ।। এই ভবে যত কার্য করে যত জনে। তাহার দৃষ্টান্ত ছবি জন্মে সেই স্থানে।। এই ভবে হয়ে যে পারদারিক জন। তার ছবি সেই স্থানে কুকুর মতন।। যত জন এই ভবে হৈবে লিপ্সক। অসিদ্ধ কি সিদ্ধ কিছু না করে পৃথক।। শুকরের মত ছবি হবে সেই স্থানে। […]